নাম সেলিম,পেশায় চা-বিক্রেতা।
মাসখানেক হল,সেলিম আমাদের এলাকায় এসেছে।
সেলিমের চায়ের স্বাদ আর ব্যবহারে,
সবাই মুগ্ধ।
রোজকার মতো,সেদিনও আড্ডা জমে উঠেছে;
শুধু সেলিমের চায়ে চুমুক দেওয়ার অপেক্ষায়।
হঠাৎ পাশ থেকে চেঁচা-মেচির আওয়াজ ভেসে এল;
আমাদের ঠেকের কয়েক গজ দূরত্বে,
এক রোমিওর সাথে সেলিমের বচসা বাধে।
ইংরেজীতে জঘন্য গালিগালাজ করল,
এমনকি চায়ের ভাঁড় ছুঁড়ে দিল সেলিমের দিকে।
রোমিও-জুলিয়েটের প্রেমের উষ্নতাকে,
সেলিমের চায়ের উষ্নতা,ছাপিয়ে যেতে পারেনি;
এটাই সেলিমের বিরুদ্ধে রোমিওর অভিযোগ।
ব্যপারটা সামলাতে আমরা সবাই পা বাড়িয়েছি;
এক পা বাড়াতেই,স্তম্ভিত আমরা সবাই;
সেলিমও পাল্টা জবাব দিল ইংরেজীতে;
সকলের সামনে,তখন রোমিওর লজ্জায় কান কাটা যাওয়ার অবস্থা।
সেলিম আরও বলল-
আপনার পকেটে অনেক টাকা,
সাথে সুন্দরী মহিলা,
আর স্টকে ইংরেজী খিস্তি থাকতে পারে;
তবে সাধারণ মানুষের স্বাধীনতায়,
হস্তক্ষেপের অধিকার আপনার নেই;
আমার চা আপনার ভালো লাগেনি,
আমি এক টাকাও নেবনা;
এই বলে সেলিম স্হানত্যাগ করল।
পরে বিষ্ময় মুক্ত হল,যখন জানলাম-
সেলিম ছোট থেকেই পড়াশোনায় তুখড়,
কিন্তু দারিদ্রতার শিকল তাকে বেঁধে দেয়।
দ্বাদশ শ্রেনীর গণ্ডি পেরতেই,
পেটের তাগিদে কাজের সন্ধান শুরু।
একটা কোম্পানিতে চাকরী জুটল,
মাসদেড়েক পর সেটাও হাতছাড়া হল;
কিছু অসৎ লোক,
চুরির দায়ে তাকে তাড়িয়ে দিল;
মাস-মাইনেও আটকে দিল।
সেদিন থেকেই,সেলিম চাকরী-জীবনকে তালাক দেয়;
চা-কে সঙ্গী করে পথচলা শুরু স্বাধীন-জীবনের খোঁজে।
-শুভ্রজিৎ হালদার